GuidePedia

0

জগদ্দল বিহার

ধামুইর হাট থেকে ২.৫-৩ কিলো পূর্বে হরিতকি ডাঙা, হরিতকি ডাঙা হতে উত্তরে ২.৫ কিলো দূরে এই বিহারের অবস্থান। জগদ্দল বিহার হতে .৫ কিলো দূরে বাংলাদেশের মাত্র দুটি আদিবাসী স্কুলের মধ্যে একটির অবস্থান। জগদ্দল আদিবাসী প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়। এ জায়গাতে মুলত সাঁওতাল আধিবাসীদের বাস। জগদ্দল বিহারের ইতিহাস থেকে জানা যায় যে রাজা রামপাল গৌড় রাজ্য পুনরুদ্ধারের পর রামাবতী নগরে রাজধানী স্থাপন করেন। আইন-ই-আকবর রচয়িতা আবুল ফজল এ স্থানটিকে রমৌতি বলে উল্লেখ করেছেন। প্রাচীন বাংলার ধর্মমঙ্গল কাব্যগুলিতে রামাবতীর উল্লেখ আছে। রাজা রামপালের পুত্র মদনপালের তাম্র শাসনেও রামাবতী নগরীর উল্লেখ আছে। দীনেশ চন্দ্র সেন বলেছেন যে, এই রামাবতী নগরে রাজা রামপাল জগদ্দল মহাবিহারের প্রতিষ্ঠা করেন। ঐতিহাসিক রামপ্রাণগুপ্ত জগদ্দল বিহার দিনাজপুরে অবস্থিত বলে উল্লেখ করেছেন। রামপ্রাণগুপ্তের জগদ্দল বিহার যে নওগাঁ জেলার আলোচ্য বিহার তা সহজেই অনুমান করা যায়। কারণ পূর্বে এ জেলা দিনাজপুর জেলার অংশ ছিল। একাদশ বা দ্বাদশ শতাব্দীতে রাজা রামপাল এই মন্দির নির্মাণ করেন বলে নীহাররঞ্জন রায়ের বাঙ্গালীর ইতিহাস গ্রন্থে উল্লেখ আছে। এ গ্রন্থে আরও উল্লেখ আছে যে এ মন্দিরের অধিষ্ঠাতা দেবতা ছিলেন অবলোকিতেশ্বর, আর অধিষ্ঠাত্রী দেবী ছিলেন মহাতারা।
এই বিহারটি প্রাচীন বাংলার শিক্ষা-দীক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের মতে এ বিহারের দুইজন স্বনামধন্য পন্ডিত হলেন দানশীল ও বিভূতিচন্দ্র। প্রায় ষাটখানা গ্রন্থের তিব্বতী অনুবাদ করেন আচার্য দানশীল। রাজপুত্র বিভূতিচন্দ্র ছিলেন একাধারে গ্রন্থকার, টীকাকার, অনুবাদক ও সংশোধক। জগদ্দল বিহারের আচার্য মোক্ষকর গুপ্ত তর্কভাষা নামে বৌদ্ধ ন্যায়ের উপর একটি পুঁথি লিখেছিলেন। শুভকর গুপ্ত ,ধর্মাকর,প্রভৃতি মনীষী আচার্যরা কোন না কোন সময় এই মহাবিহারের অধিবাসী ছিলেন। কথিত আছে যে কাশ্মিরের প্রসিদ্ধ সাধু ও পন্ডিত সাক্য শ্রীভদ্র ১২০০ খ্রিস্টাব্দে বিভিন্ন বিহার দর্শন করে জগদ্দল বিহারে এসেছিলেন। বাংলার জগদ্দল বিহারের বৌদ্ধ পন্ডিত বিদ্যাকর সুভাষিত রত্নকোষ নামে একটি কোষকাব্য সংকলন সমাপ্ত করেছিলেন। প্রাচীন বাংলার এই জ্ঞানসাধন কেন্দ্র আজ সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত। বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তত্ত্বাবধানে বর্তমানে এ স্থানটিতে খনন কাজ চলছে।
 জগদল বিহার যাওয়ার ব্যবস্থা: নওগাঁ বালুডাংগা বাস টার্মিনাল হতে সরাসরি বাসযোগে ধামইরহাট উপজেলা সদর সেখান হতে বাস/অটোরিক্মা যোগে ঐতিহাসিক জগদলবিহার যাওয়া যায়। আনুমানিক দূরত্ব: ৬৫ কিঃমিঃ বাসভাড়া- ৬০-৭০/-টাকা । থাকার ব্যবস্থা- জনসাধারণের জন্য জগদ্দল বিহার থাকার কোন ব্যবসহা নেই। দিনে যেয়ে দিনেই ফিরে আসতে হবে অথবা উপজেলা সদর/জেলা সদরে থাকা যাবে।

Post ভালো  লাগলে Like Please: https://www.facebook.com/dhamoirhat.news


 

Post a Comment

 
Top