GuidePedia

0


আমিবাংলার...। সারাদুনিয়ায় ভাষার দাবিতে আন্দোলনকরতে হয়েছে এ ইতিহাসখুজে পাওয়া ভার। কিন্ত১৯৫২ সালে মায়ের মুখেরভাষায় কথা বলার অধিকারনিয়ে আমাদের (বাঙালীদের) আন্দোলন করতে হয়েছিল, দিতেহয়েছিল কয়েকটি তাজা প্রাণ।আর সেদিনই শহীদদের লালরক্তে বোনা হয়েছিল স্বাধীনতারসুপ্ত বীজ। ১৯৫২ সালের২১ শে ফেব্রুয়ারীর হত্যাকান্ডেরপর পাকিস্তানী শাসকদের বিরোদ্ধে আন্দোলন তীবৃতর হয়। এইআন্দোলন মূহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েসারা বাংলায় শহর থেকেগ্রামে। আন্দোলনে অংশ নেয় বাংলারসকল শ্রেণী-পেশার মানুষ।প্রতিবাদ মুখর হয় বাঙালীরা।নওগা জেলার ধামইরহাট উপজেলাতেওরাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে প্রতিবাদ,মিছিল, মিটিং, আন্দোলন হয়েছিল।কালের চক্রে সে ইতিহাসআমরা ভুলে যাচ্ছি। ভবিষতপ্রজন্মের কাছে মনে হবেএটা এক কল্পকাহিণী মাত্র।আমি একজন বাংলা ভাষাও সাহিত্যের ছাত্র হিসেবে নিজেরতাগিদেই ধামইরহাটে ভাষা আন্দোলনের ইতিকথালিখার প্রেরণা অনুভব করি। প্রায়পাচ বত্সর ধরে এইতথ্য-উপাত্য গুলোর সংগ্রহেরচেষ্টা করেছি। স্মৃতি যদিভুল না করে, তত্কালীনউপজেলা নির্বাহী অফিসার আ: রাজ্জাকসাহেব সহ আমি ‘আলোয়আলোয় ভূবণ ভরা’ নামেএকটি সংকল্ন প্রকাশের কাজেহাত দিয়ে ছিলাম। সেইসংকল্নে আমার এই লিখাটিআসার কথাছিল। আমি সে বত্সরেকৃষক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ায় রাস্ট্রদ্রোহীতার দায়েজেলে গেলাম আর সংকল্নটিওআলোর মুখ দেখতে পেলনা। গত দুদিন আগেবর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসারেরসাথে আলাপ প্রসঙ্গে আমিধামইরটাহাটের ভাষা আন্দোলনের কিছুতথ্য আমার সংগ্রহে আছেবলে জানালে তিনি এরসংক্ষিপ্ত একটি ইতিবৃত্ত প্রবন্ধআকারে লিখতে বলেন। তারঅনুপ্রেরণায় সংগ্রহীত উপকরণ গুলো আজআপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি।আমি আগেই ক্ষমা চেয়েনিচ্ছি আমার এই লিখাধামইরহাটের ভাষা আন্দোলনের পরিপুর্ণকোন রুপ নয়। আরোঅজানা অনেক কিছু আছেযা আপনাদের গোচরে আনতে পারিনাই বা প্রবন্ধে আজযাদের নাম উল্লেখ করেছিতাদের চাইতে আরো গুরুত্বপূর্ণ কেউ বাদ পড়তেপারেন। পরবর্তিতে তা সংশোধন করাহবে ইনশাল্লাহ্‌। ৫২-এর ভষা আন্দোলনবলতে যা বুঝায়, হয়তো ধামইরহাটে সে রকম কিছুহয়নি তবুও এই মফস্যলএলাকায় ৫২-এর ২৪শে ফেব্র্রুয়ারী অন্তত: একটি বিক্ষোভমিছিল ও পথসভা হয়েছিল।এটাই আমাদের জন্য অনেকবড় অর্জন অনেক বড়ইতিহাস। এই বিক্ষোভ মিছিলেঅংশ নিয়েছিলেন এ রকম ভাষাসৈনিকদের অন্তত: চার জনেরসাথে আমার সাক্ষাত হয়েছে।তারা হলেন আলহাজ এ,জে,এম, আব্দুলহাই ওরফে আবু বিএসসি(ধামইরহাট বাজার), মরহুম আবুল খয়েরওরফে খয়ের মস্টার (মঙ্গলবাড়ি),আলহাজ মহফিল হোসেন ওরফেমফেল মস্টার(চকিলাম), সাংবাদিকমোজাম্মেল হক (আমাইতাড়া)।তাদের অন্যতম এ.জে.এম. আব্দুল হাইতার স্মৃতি চারণে বলেন,৫২-এর ‘২১ শেফেব্রুয়ারীর দুই কি তিনদিন পরে ফার্সিপাড়া হাইস্কুলের(বর্তমানে ফার্শিপাড়া রহমানীয়া দাখিল মাদ্রাসা, স্থান্তরিতআমাইতাড়া সাফিয়া বহুমূখী উচ্চবিদ্যালয়) একদল ছাত্র এসেছিলচকময়রাম ME MIDIL ENGLISHSCHOLL স্কুলে (বর্তমানের চকময়রাম মডেল স্কুল)।আমি ছিলাম সষ্ঠ শ্রেণীরছাত্র (ME MIDIL ENGLISHSCHOLL -এ তখন ষষ্ঠ শ্রেণীপর্যন্ত পড়ানো হত)।সেদিনের তারিখ টা আমারসঠিক মনে নেই। চকময়রামস্কুলের মসজিদের কাছে ২০-২৫জন ছাত্র অবস্থান নেয়।তাদের মধ্যে মরহুম আফাজউদ্দীন (বেড়াডাঙা)-এর সাথে আরোদু’জন ছাত্র স্কুলেরভিতরে আসে। বড় ছাত্রহিসেবে আমাদের সষ্ঠ শ্রেণীতেঢুকে, আফাজ (সপ্তম শ্রেণীতেআবার ক্লাসমেট)বলে, ‘বাংলাকে রাস্ট্রভাষারদাবিতে ঢাকায় মিছিলে পুলিশগুলি বর্ষণ করে এবংকয়েক জন ছাত্র মরাযান এর প্রতিবাদে আমরাআজ থানার সামনে একটামিছিল করব তোমাদের যেতেহবে, বলে এক প্রকারজোর করেই আমাদের বেরকরে আনা হলো ক্লাসথেকে। সে সময় চকময়রামME MIDIL ENGLISH SCHOL এরপ্রধান শিক্ষক ছিলেন মো:আব্দুর রাজ্জাক স্যার (কাশিয়াডাঙা)।হেড স্যার এসে বিষয়টিকেবাধা দেবার চেষ্টা করলেনকিন্তু ততক্ষনে ফার্শিপাড়া হাইস্কুলের আগত ছাত্র আরআমরা মিলে একটা মিছিলধামইরহাট থানা দিকে চলতেশুরু করেছি। মিছিল খুকশিখাড়ি পার হতেই গণমিছিলেরুপ নেয়। তখন অংশগ্রহণকারীরসংখ্যা ৭০-৮০ জনেরমত। শ্লোগান ছিল ‘রাস্ট্র ভাষাবাংলা চাই, নাজিমুদ্দীনের রক্তচাই। আর কয়েক ধাপএগুতেই থানার দু’জনপুলিশ মিছিলের সাথে চলতে লাগল।মিছিলটি থানার সামনে দিয়েসিও অফিস ঘুরে মোখলেছডাক্তার সাহেব এর বাসারপূর্ব পাশের রাস্তা দিয়েহাটখোলা হয়ে বিহারী বাবুরবাসার রাস্তা দিয়ে নিমতলারমোড় ঘুরে আবার থানারসামনে দিয়ে নূরাণী সাহেবএর বাসার সামনে আমগাছ তলায় এসে জমায়েতহয়। সেখানে একটি প্রতিবাদসভা হয়। এই প্রতিবাদসভায় কয়েক জন বক্তব্যদেন তাদের মধ্যে আফাজাউদ্দীন সাহেব ইংরেজীতে কছুবলছিলেন যার অর্থ এরকম রাষ্ট্রের শাসক বেইমান হলেরস্ট্র চলবে কি করে?উল্লেখ্য মিছিলটি কোনরূপ বাধার সম্মুখীনহয়নি। তবে পরবর্তীতে এরজন্য মুসলিমলীগ নেতা মোজাফর রহমানচৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক স্যারকেভত্সনা করেছিলেন বলে জানা যায়।আর একজন হলেন আলহাজমহফিল হোসেন আমার বাবা।যিনি ভালো ইতিহাস জানেনবলে ধামইরহাট বাসীর কছে সমাদ্রিত।তিনিও পূর্বোক্ত ঘটনাকে সমর্থন করেনএবং বলেন ডা: আজিজাররহমান (সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী)৫২ এর আগে রাষ্ট্রভাষাবাংলার দাবীতে ফার্শিপাড়া স্কুলেবক্তৃতা দিয়েছিলেন। ২১ শে ফেব্রুয়ারীশহীদের জন্য ঐ বছরেরফাল্গুন মাসে চকশব্দল পীরপুকুর পাড়ে ধর্ম সভায়মোনাজাত করা হয়েছিল।যা ড:তসিকুল ইসলাম রাজশাহীতে ভাষাআন্দোলনের কথা বলতে গিয়েতার এক প্রবন্ধে বলেছেন।খয়ের স্যারের সাথে যোগাযোগ করলেতিনি ধামইরহাটে মিছিল ও প্রতিবাদসভা হয়েছিল বলে শুনেছেন।তিনি আসতে পারেন নাই।তবে তার নেতৃত্বে মঙ্গবাড়ীতেএকটি প্রতিবাদ মিছিল হয়েছিল।এছাড়া ধামইরহাটেরসাংবাদিক পথিকৃত মোজ্জাম্মেল হোসেনগতকাল মোবাইলে আমরা সাথে কথাবলে উপর উক্ত ঘটনাকেসমর্থন করেন এবং তিনিনিজেও মিছিলে ছিলেন বলেজানান। পরিশেষে বলতে চাই ইতিহাসহারিয়ে যাওয়া কথা মালা।এই সংক্ষিপ্ত পরিসরে অথবা আমারঅজ্ঞতার করনে হয়তো অনেকতথ্য তুলে আনা সম্ভবহয় নাই। আজকের উপস্থিতিদেরকাছে আমার অজ্ঞতা স্বীকারকরে পরবর্তীতে ধামইরহাটে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকেআরো সমৃদ্ধ করার আশারাখি। আল্লাহ হাফেজ সম্পাদনায়আ.ন.ম. আফজালহোসেন প্রভাষক বাংলা বিভাগ পাগলদেওয়ান ফাজিল মাদ্রাসা ধামইরহাট,নওগা। 

Post ভালো  লাগলে Like Please: https://www.facebook.com/dhamoirhat.news

Post a Comment

 
Top